Home / News in the Media / নন ট্র্যাডিশনাল মার্কেটে রফতানি বৃদ্ধির পরামর্শ দিচ্ছেন ড. মোয়াজ্জেম

নন ট্র্যাডিশনাল মার্কেটে রফতানি বৃদ্ধির পরামর্শ দিচ্ছেন ড. মোয়াজ্জেম

Published in দৈনিক জনকন্ঠ on Tuesday, 7 February 2017

অর্জিত হয়নি রফতানি লক্ষ্যমাত্রা

  • ৭ মাসে রেমিটেন্স এসেছে ২ হাজার ১১ কোটি ডলার

অর্থনৈতিক রিপোর্টার ॥

২০১৬-১৭ অর্থবছরের জুলাই-জানুয়ারি মেয়াদে অর্থাৎ অর্থবছরের প্রথম ৭ মাসে রফতানি খাতে আয় হয়েছে ২ হাজার ১১ কোটি মার্কিন ডলার। যা গত ২০১৫-১৬ অর্থবছরের একই সময়ের রফতানি আয়ের তুলনায় ৮৫ কোটি টাকা বা ৪ দশমিক ৩৬ শতাংশ বেশি। বছরের ব্যবধানে রফতানি আয় বাড়লেও চলতি অর্থবছরের প্রথম ৭ মাসের রফতানি লক্ষ্যমাত্রা অর্জিত হয়নি। এদিকে একক মাস হিসেবে ডিসেম্বরে রফতানি আয় হয়েছে ৩৩১ কোটি ২০ লাখ ডলার, যা গত বছরের একই সময়ের চেয়ে ৩ দশমিক ৯৭ শতাংশ বেশি। রফতানি উন্নয়ন ব্যুরোর (ইপিবি) ডিসেম্বর মাসে প্রকাশিত হালনাগাদ প্রতিবেদনে এসব তথ্য উঠে এসেছে।

প্রতিবেদনে দেখা যায়, ২০১৫-১৬ অর্থবছরে সব ধরনের পণ্য রফতানিতে বৈদেশিক মুদ্রা আয় হয়েছে মোট ৩ হাজার ৪২৫ কোটি ৭১ লাখ ৮০ হাজার মার্কিন ডলার। চলতি ২০১৬-১৭ অর্থবছরে রফতানি আয়ের লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হয়েছে ৩ হাজার ৭০০ কোটি মার্কিন ডলার। এর মধ্যে প্রথম ৭ মাসে ২ হাজার ১০৪ কোটি ৩০ লাখ ডলার রফতানি আয় লক্ষ্যমাত্রার বিপরীতে আয় হয়েছে ২ হাজার ১১ কোটি ডলার; যা লক্ষ্যমাত্রার চেয়ে ৪ দশমিক ৪৩ শতাংশ কম। ইপিবির প্রতিবেদন অনুযায়ী, সদ্য সমাপ্ত জানুয়ারি মাসে রফতানি আয়ের লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হয়েছিল ৩৪০ কোটি ৬ লাখ ডলার। এ সময়ে রফতানি আয় হয়েছে ৩৩১ কোটি ২০ লাখ মার্কিন ডলার; যা লক্ষ্যমাত্রার চেয়ে ২ দশমিক ৭৬ শতাংশ কম। প্রতিবেদনে দেখা যায়, দেশের রফতানি আয়ের প্রায় ৮০ শতাংশ আসে তৈরি পোশাক খাত থেকে। ২০১৬-১৭ অর্থবছরের প্রথম ৭ মাসে তৈরি পোশাক খাতের পণ্য রফতানিতে আয় হয়েছে ১ হাজার ৬৪১ কোটি ৩২ লাখ মার্কিন ডলার। এ খাতের রফতানি আয় আগের অর্থবছরের তুলনায় ৪ দশমিক ১৪ শতাংশ বাড়লেও অর্জিত হয়নি নতুন লক্ষ্যমাত্রা। চলতি অর্থবছরের জুলাই-জানুয়ারি মেয়াদে নিটওয়্যার খাতের পণ্য রফতানিতে ৮০৬ কোটি এবং ওভেন গার্মেন্টস পণ্য রফতানিতে ৮৩৫ কোটি ২৯ লাখ ৩ হাজার মার্কিন ডলার আয় হয়েছে। এদিকে শুধু গত আগস্টেই তৈরি পোশাক খাত থেকে রফতানি আয় আসে ২৭২ কোটি ৬২ লাখ ডলারের। সেপ্টেম্বরে ঈদ-উল-আযহার কারণে বেশ কিছুদিন ছুটি থাকায় রফতানি আয়ে কিছুটা নেতিবাচক প্রভাব পড়েছে। গত অক্টোবরে সবচেয়ে বেশি রফতানি আয় ২৫০ কোটি ১৩ লাখ ডলার এসেছে তৈরি পোশাক খাত থেকে। নবেম্বর মাসে আসে ২৩১ কোটি ৯৯ লাখ ডলার ও ডিসেম্বর মাসে ২৫৭ কোটি ৮৪ লাখ ডলার রফতানি আয় অর্জিত হয়েছে পোশাক খাত থেকে। ডিসেম্বর মাসে রফতানি আয় অর্জিত হয় ২৭০ কোটি ৩৫ লাখ ডলার। তৈরি পোশাক শিল্প মালিকদের সংগঠন বিজিএমইএ’র সভাপতি সিদ্দিকুর রহমান বলেন, যুক্তরাষ্ট্রে জুলাই-ডিসেম্বর সময়ে আমাদের পোশাক রফতানি কমেছে ৯ দশমিক ১১ শতাংশ। এ মুহূর্তে পোশাক শিল্পকেও স্থানীয় ও আন্তর্জাতিক পর্যায়ে বিভিন্ন প্রতিকূলতা মোকাবেলা করে এগিয়ে যেতে হচ্ছে। তিনি বলেন, ইউরো এর দরপতন, বেক্সিট এবং মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের নির্বাচন প্রভাবের কারণে আমাদের পণ্যের দর পতন হলেও গত ২ বছরে গ্যাস সংকটসহ নানাবিধ কারণে আমাদের উৎপাদন ব্যয় বেড়েছে ১৭ শতাংশ। অন্যদিকে আমাদের তৃতীয় বৃহত্তম বাজার যুক্তরাজ্যে উক্ত সময়ে প্রবৃদ্ধি কমেছে ৫.১৯ শতাংশ।

বেসরকারী গবেষণা সংস্থা সেন্টার ফর পলিসি ডায়ালগের (সিপিডি) অতিরিক্ত গবেষণা পরিচালক খন্দকার গোলাম মোয়াজ্জেম বলেন, সারা বিশ্বেই বর্তমানে অর্থনীতিতে একটি শ্লথগতি লক্ষ্য করা যাচ্ছে। চীনে রফতানি প্রবৃদ্ধি কমেছে। অন্য দেশেও প্রবৃদ্ধি বেশি ইতিবাচক ধারায় নেই। ইউরোপীয় ইউনিয়ন থেকে যুক্তরাজ্যের সরে আসার সিদ্ধান্ত (ব্রেক্সিট), পাউন্ড ও ইউরোর দরপতন সব মিলিয়ে বৈশ্বিক হিসেবে বাংলাদেশের প্রবৃদ্ধির হার ভাল। রফতানি প্রবৃদ্ধি এখনও ভাল অবস্থানে রয়েছে। তবে ‘নন ট্র্যাডিশনাল মার্কেটে’ আমাদের রফতানি বাড়াতে হবে।

ইপিবি’র প্রতিবেদন অনুযায়ী, অন্য পণ্যের মধ্যে গত ৭ মাসে হোম টেক্সটাইল খাতে প্রবৃদ্ধি অর্জিত হয়েছে ১ দশমিক ৪২ শতাংশ। এই সময়ে আয় এসেছে ৪২ কোটি ৭২ লাখ ডলার। চামড়া ও চামড়াজাত পণ্য রফতানিতে অর্থবছরের প্রথম সাত মাসে গত বছরের একই সময়ের চেয়ে প্রবৃদ্ধি হয়েছে ১২ দশমিক ১৮ শতাংশ। আয় হয়েছে ৭৪ কোটি ৩৭ লাখ ডলার, যা লক্ষ্যমাত্রার চেয়ে ৭ দশমিক ১৯ শতাংশ বেশি। পাট ও পাটজাত পণ্য থেকে ৭ মাসে রফতানি আয়ে প্রবৃদ্ধি অর্জিত হয়েছে ১৪ দশমিক ০৫ শতাংশ। এ খাতে রফতানি আয় এসেছে ৫৬ কোটি ৩৯ লাখ ডলার, যা লক্ষ্যমাত্রার চেয়ে ২ দশমিক ৮৭ শতাংশ বেশি। এছাড়া গত ৭ মাসে প্লাস্টিক পণ্যে প্রবৃদ্ধি অর্জিত হয়েছে ৪৫ দশমিক ৭৪ শতাংশ। এই সময়ে আয় এসেছে ৭ কোটি ৫৩ লাখ ডলার, যা লক্ষ্যমাত্রার চেয়ে ৪১ দশমিক ৭৭ শতাংশ বেশি।

এছাড়া গত ৭ মাসে কৃষি পণ্য রফতানিতে প্রবৃদ্ধি অর্জিত হয়েছে ১ দশমিক ৯১ শতাংশ। এই সময়ে আয় এসেছে ৩০ কোটি ৮১ লাখ ডলার। প্রসঙ্গত, ২০১৬-১৭ অর্থবছরে রফতানি আয়ের লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হয়েছে তিন হাজার ৭০০ কোটি ডলার। গত অর্থবছরে (২০১৫-১৬) দেশে মোট রফতানি আয় হয় তিন হাজার ৪২৫ কোটি ডলার।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

*

x

Check Also

RMG export growth to USA outshines China, Vietnam in Jan 2022

Originally posted in Textile Today  on 13 March 2022 Bangladesh’s readymade garment ...